অক্টোবরে ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে আসছে অত্যাধুনিক লঞ্চ জমজম-৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 11:53 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 11:53 AM
অক্টোবরে ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে আসছে অত্যাধুনিক লঞ্চ জমজম-৭
যাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে প্রতিনিয়ত ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে অত্যাধুনিক লঞ্চ যুক্ত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় জমজম নেভিগেশন কোম্পানি চারতলা বিশিষ্ট জমজম-৭ নামে একটি লঞ্চ তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবর মাসে এই রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করবে লঞ্চটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এমভি জমজম-৭ যাত্রীবাহী লঞ্চের স্বত্বাধিকারী ও পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান লিটন।
সরেজমিনে দেখা যায়, লঞ্চটির ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। পর্দা, লাইটিং, ফিনিশিং, রং, ফ্যান, এসি লাগানোসহ সিলিং ডেকোরেশনের কাজ চলছে।
জমজম লঞ্চের মালিকের প্রতিনিধি বিল্পব সরকার জানান, এমভি জমজম-৭ লঞ্চটি চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে যুক্ত হতে যাচ্ছে। আগামী মাসের মধ্যে লঞ্চটি এই রুটে সংযুক্ত হচ্ছে। এর মাধ্যমে যাত্রীদের সেবায় জমজম নেভিগেশন কোম্পানি আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। আশা করি, যাত্রীরা জমজম-৭ লঞ্চে আরামদায়ক ভ্রমণ করতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, লঞ্চটি চারতলা বিশিষ্ট। নিচতলায় ১৭১টি নরমাল চেয়ার, ৬২টি ফাস্টক্লাস চেয়ার, ৪৩টি সিঙ্গেল কেবিন, ২১টি ডাবল কেবিন, ৪টি ভিআইপি কেবিন, সাতটি ফ্যামিলি কেবিন রয়েছে। লঞ্চটি তৈরি করতে প্রায় দুই বছর তিন মাস সময় লেগেছে।
এমভি জমজম-৭ লঞ্চের স্বত্বাধিকারী ও পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান লিটন বলেন, আমরা আশা করছি লঞ্চটি অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা-চাঁদপুর রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করবে। জমজম নেভিগেশনে জমজম-৭ লঞ্চটা আমাদের কোম্পানিতে তৃতীয় সংযোগ। এটি নিজস্ব তত্ত্বাবধানে নতুনভাবে নির্মিত হচ্ছে। আমরা যাত্রীদের জন্য সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রেখেছি। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ বয়া রাখা হয়েছে। তাছাড়া যাত্রীদের চলাচলের জন্য ফাঁকা জায়গা রাখা হয়েছে। আমার জানা মতে, বাংলাদেশে এ ধরনের চার স্টেপ লঞ্চ আর নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, যাত্রীরা যেন লঞ্চে খাওয়া-দাওয়া করতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখার।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতি কতটুকু আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব সেটা সময়ই বলে দেবে।
তিনি বলেন, লঞ্চটির দৈর্ঘ্য ২৩০ ফুট এবং প্রস্থ ৩৭ ফুট এবং চারতলা বিশিষ্ট আধুনিক জাহাজ। যাত্রীদের কেবিন, ভিআইপিদের জন্য আলাদা সিস্টেম, মালিক ও স্টাফদের আলাদা থাকার জায়গা রাখা হয়েছে। প্রতিটা বিভাগ আলাদাভাবে মনিটরিং করছেন। বিআইডব্লিটিএয়ের কর্মকর্তারা প্লানিং দিয়েছেন। আমরা তাদের প্লান অনুযায়ী কাজ করেছি।
লঞ্চটির স্বত্বাধিকারী ও পরিচালক বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে এই রুটে ব্যবসা করছি। বর্তমানে চাঁদপুর রুটে আমাদের যেসব লঞ্চ চলাচল করছে, আমার কাছে মনে হয়েছিল সেগুলো সময় উপযোগী নয়। চাঁদপুরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল, জমজম কোম্পানি একটি আধুনিক লঞ্চ উপহার দেবে। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি উপলব্ধি করেছি, হ্যাঁ এখানে একটি আধুনিক লঞ্চ প্রয়োজন। সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আবে জমজম-৭ লঞ্চটি তৈরি করা হয়।
তিনি বলেন, লঞ্চটির ৯৫ শতাংশ কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন টুকিটাকি কাজগুলো করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের অনুমোদন ক্রমে ট্রায়াল পর্যায়ে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাত্রীদের সেবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। আমার প্রত্যাশা চাঁদপুরবাসী সেবা ও গতির দিক থেকে সময়োপযোগী সেবা পাবেন।
তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনারোধে লঞ্চটিতে জাপানি ১২০০ হস পাওয়ারের দুটো ইঞ্জিন বসানো হয়েছে। ব্রিজ কন্ট্রোল, হাইড্রোলিক গিয়ার, ফায়ার বকেট, উন্নত প্রযুক্তির রাডার ও জিপিএস রয়েছে। তাছাড়া নদীর ডুবোচর ও পানির পরিমাণ নির্ধারণ করে বসানো হচ্ছে ইকো সাউন্ডার।
নতুন লঞ্চের সার্ভে ও ফিটনেস সনদ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে দেওয়ায় কারণে চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক মো. কায়সারুল ইসলাম মালিক পক্ষের বরাত দিয়ে বলেন, এমভি আবে জমজম-৭ নামে একটি লঞ্চ ঢাকা-চাঁদপুর রুটে যাত্রী সাধারণের জন্য একটি আধুনিক লঞ্চ। এটি শিগগিরই এই রুটে সংযুক্ত হবে। লঞ্চটি নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সার্ভে ও ফিটনেস সনদসহ প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে লঞ্চ আগামী অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে চালু হবে।