ঋণের টাকায় আর ভর্তুকি নয় : আইএমএফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ অক্টোবর, ২০২২, 4:41 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ অক্টোবর, ২০২২, 4:41 PM
ঋণের টাকায় আর ভর্তুকি নয় : আইএমএফ
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) জ্বালানি খাত সংস্কারে কঠিন শর্ত আরোপ করেছে। এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে। এর মধ্যে রয়েছে এই খাতে ভর্তুকি কমাতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানির বিভিন্ন উপকরণের দাম বাড়াতে হবে। দাম কমলে দ্রুত তা সমন্বয় করতে হবে।
তাদের বক্তব্য, ভর্তুকির বড় অংশই আসে ঋণ থেকে। তাই ঋণের টাকায় ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। জ্বালানি আমদানির ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে হবে। প্রতিটি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করতে হবে। জ্বালানির অপচয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করতে হবে। এসব শর্ত মানলে আসবে ঋণ।
সূত্র জানায়, আইএমএফের ঋণ পেতে এই শর্তগুলো স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে। বাকি শর্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে অঙ্গীকার করতে হবে। একই সঙ্গে কোন সময়ের মধ্যে শর্তগুলো বাস্তবায়ন করা হবে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও পরিকল্পনা জানাতে হবে সংস্থাটিকে। এ বিষয়ে ঢাকা সফররত আইএমএফ মিশন অর্থ মন্ত্রণালয় ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে।
ইতোমধ্যে আইএমএফ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এই সেক্টরের ভর্তুকির পরিসংখ্যান, জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে জ্বালানি আমদানির প্রক্রিয়া ও ঋণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আমদানি প্রক্রিয়া সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে।
গত জুলাই মাসে আইএমএফের যে মিশন ঢাকায় এসেছিল তারাই এসব শর্ত দিয়ে গেছে। ওই শর্তের আলোকে গত আগস্টে সরকার জ্বালানি তেলের দাম ৪৯ থেকে ৫২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। গত জুনে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ২৩ শতাংশ। এলএনজির দাম প্রতি ঘনমিটার ৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১ টাকা ৯১ পয়সা করা হয়েছে। গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ফলে এসবের ওপর নির্ভরশীল বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ কারণে বিদ্যুতের দাম ৬৬ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) শুনানি শেষে মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। ফলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়নি।
সরকারের হিসাবে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতে এখনো ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আইএমএফও ভর্তুকি কমানোর শর্ত দিয়েছে। যে কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর চাপও রয়েছে। কিন্তু সরকার মূল্যস্ফীতির চাপ, দেশব্যাপী তীব্র লোডশেডিং, শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংকট ও মানুষের জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় নিয়ে দাম বাড়ায়নি। কিন্তু আইএমএফ জানিয়েছে, ভর্তুকি কমাতে হলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিকল্প নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চলতি আইএমএফ মিশন ঢাকায় আসার আগেই সরকার জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। এটা আইএমএফের অন্যতম শর্ত ছিল। এখন ভর্তুকির চাপ কমাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ালেই আইএমএফের প্রধান শর্তও বাস্তবায়ন হবে।