এবার ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, 12:26 PM
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, 12:26 PM
এবার ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা
ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংস ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিম তীরে সহিংসতা নিয়ে ইসরায়েলকে কয়েক দফায় সতর্ক করার পর মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) ভিসা নিষেধাজ্ঞার এই ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
মূলত অবৈধভাবে বসতি স্থাপনকারী ছাড়াও সহিংসতা চালানো ইসরায়েলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র মঙ্গলবার ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা শুরু করেছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। মূলত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা ঠেকানোর জন্য ইসরায়েলের কাছে একাধিক আবেদন জানানোর পর সর্বশেষ এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণ ও ইসরায়েলিদের ওপর ফিলিস্তিনি আক্রমণসহ পশ্চিম তীরে স্থিতিশীলতা নষ্ট করে এমন যেকোনও পদক্ষেপের বিরোধিতা বারবারই করেছে যুক্তরাষ্ট্র।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংস হামলাকারী উগ্রপন্থি বসতি স্থাপনকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে ইসরায়েল সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বারবার বলেছেন, এ ধরনের আক্রমণ অগ্রহণযোগ্য। গত সপ্তাহেও ইসরায়েল সফরকালে আমি স্পষ্ট করে বলেছি, যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব ক্ষমতা ব্যবহার করে এ ধরনের বিষয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।’
অবৈধভাবে বসতি স্থাপনকারী ও সহিংসতা চালানো ইসরায়েলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্লিংকেন বলেন, ‘আজ স্টেট ডিপার্টমেন্ট পশ্চিম তীরে সহিংসতামূলক কাজ বা অন্যান্য পদক্ষেপের মাধ্যমে বেসামরিক নাগরিকদের প্রয়োজনীয় অধিকার, বিভিন্ন পরিষেবা ও মৌলিক অধিকার সীমাবদ্ধ করে শান্তি, নিরাপত্তা বা স্থিতিশীলতা নষ্ট করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নতুন ভিসা বিধিনিষেধ নীতি বাস্তবায়ন করছে। এ ধরনের ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এই বিধিনিষেধের আওতাভুক্ত হতে পারেন।’
রয়টার্স বলছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা বারবার সতর্ক করে বলেছেন, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বন্ধ করতে ইসরায়েলকে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। ইহুদি বসতি সম্প্রসারিত হওয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেখানে হামলা বেড়েছে এবং গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে এই সহিংসতা আরও বেড়েছে।
এদিকে ভিসা নিষেধাজ্ঞার এই ঘোষণার পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন গত সপ্তাহে সফরের সময় ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের কাছে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চরমপন্থি সহিংসতা বন্ধ করতে তাদের আরও কিছু করতে হবে এবং এর জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেছেন, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের আক্রমণ রোধেও ফিলিস্তিনি নেতাদের আরও বেশি কিছু করতে হবে। নতুন এই নীতির অধীনে প্রথম নিষেধাজ্ঞাগুলো মঙ্গলবার আরোপ করা হয়েছে এবং আগামী দিনে আরও অনেকের ওপর এটি আরোপ করা হবে।
মিলার বলেন, মার্কিন এই পদক্ষেপ শেষ পর্যন্ত কয়েক ডজন ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর প্রভাব ফেলবে। এছাড়া দায়ী কোনও ইসরায়েলির এখন মার্কিন ভিসা থাকলেও তাদের সেই ভিসা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও জানিয়ে দেওয়া হবে।