এবার পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৫ এপ্রিল, ২০২২, 11:29 AM
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৫ এপ্রিল, ২০২২, 11:29 AM
এবার পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর
দেশজুড়ে চলা ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেই পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অজিত নিভার্দ কাবরাল। রোববার দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে বরাবর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
গত বছর সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৬তম গভর্নর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন কাবরাল। অবশ্য এটিই তার প্রথম মেয়াদ ছিল না; এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১২তম গভর্নর হিসেবে ২০০৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন কাবরাল।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে যাওয়া এর একটি বড় কারণ।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়; কিন্তু দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এতটাই কমেছে যে, তা দিয়ে এক মাসের আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে না।
বিদেশি মুদ্রার মজুত কমে যাওয়ায় মুদ্রাস্ফীতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে শ্রীলঙ্কায়। গত মাসে ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কান রুপির মান পড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকায় দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে খাদ্য-ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজার থেকে জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না দেশটি, ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার গণপরিবহন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা।
বিদ্যুৎ-খাদ্য-ওষুধ-জ্বালানি সংকটে অতিষ্ঠ শ্রীলঙ্কার জনগণ গত কিছু দিন ধরে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন তারা। জনরোষ সামাল দিতে শনিবার দেশজুড়ে তিন দিনের কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয় দেশটির সরকার।
কারফিউয়ের দ্বিতীয় দিন, রোববার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ব্যাতীত ২৬ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভার সবাই একযোগে পদত্যাগ করেন।
মন্ত্রীসভার সদস্যরা পদত্যাগ করার পরই নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন অজিত নিভার্দ কাবরাল।
শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সবচেয়ে সফল গভর্নর মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, নিজের প্রথম মেয়াদে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির আকার তিনগুণ বৃদ্ধি করেছিলেন কাবরাল।