ঢাকা ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
নির্বাচন কবে হতে পারে, জানালেন আসিফ নজরুল সব রেকর্ড ভাঙল সোনার দাম একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সুজেয় শ্যাম আর নেই আ.লীগের আমলে গড়া সিন্ডিকেট এখনও এই সরকার ভাঙতে পারেনি বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি ৭ মার্চ, ১৫ আগস্টসহ জাতীয় আট দিবস বাতিল হচ্ছে লেবাননজুড়ে ইসরায়েলের সিরিজ বিমান হামলা, নিহত অন্তত ২৩ সাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে দূরবর্তী সতর্ক সংকেত কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী পদে ওমর আবদুল্লাহর শপথ আজ সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত ৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মেয়ের বিয়েতে কনের ওজনের সমপরিমাণ কয়েন

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ এপ্রিল, ২০২৩,  12:13 PM

news image

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মেয়ের বিয়েতে কনের ওজনের সমপরিমাণ কয়েন (পয়সা) দিয়েছেন এক বাবা। কনের পরিবারের দাবি, জন্মের পরে মানত ছিল মেয়ের ওজনের সমপরিমাণ টাকা দিয়ে বিয়ে করাবেন। কিন্তু ঘটনা মানতের না, বরং বরের বাবার দাবি পূরণ করতেই মেয়ের ওজনের পরিমাণ কয়েন (পয়সা) যৌতুক দেওয়া লেগেছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে দিতে। ঘটনাটি গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের প্রাগপুর মাঠপাড়া গ্রামে ঘটে।  
 
জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ০১ নম্বর প্রাগপুর ইউনিয়নের প্রাগপুর মাঠপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কনের বাবা রতন আলীর বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মেয়েকে দাঁড়িপাল্লায় তুলে তার সমপরিমাণ ৫ টাকার কয়েন দিয়ে মেয়ের বিয়ে দেন। এতে মেয়ের বাবা রতন আলীকে প্রায় ৪০ হাজার টাকার পরিমাণে মেয়ের যৌতুক হিসেবে দিতে হয়েছে। যদিও মেয়ের বাবা রতন আলীর দাবি, মেয়ের জন্মের সময় মানত করা হয়েছিল। মেয়ে বেঁচে থাকলে তার বিয়েতে তার ওজনের সমপরিমাণ টাকা উপঢৌকন দেব। তাই মেয়েকে দাঁড়িপাল্লায় মেপে কয়েন দেওয়া হয়েছে। এটি যৌতুকের টাকা নয় বরং পাত্রকে উপহার বাবদ দেওয়া টাকা যা ওদের সাংসারিক জীবনের কাজে লাগাতে পারে অথবা দশজনকে খাওয়াতে পারে।
 
এটি শুধু কী মানত ছিল, নাকি মেয়ের বাবা কোনো চাপে পড়ে মেয়ের ওজনে টাকা দিতে হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় ঘটনা অন্য। মূলত বরের বাবা একই এলাকার মাইনুল ইসলামের দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে হয়েছে মেয়ের বাবাকে।এক দিকে বাল্যবিয়ে অন্যদিকে এমন প্রকাশ্যে যৌতুক দেওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও আকারে প্রকাশ হয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলেও নিরব ভূমিকায় দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন। তবে বিষয়টা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওবায়দুল্লাহ।  
 
প্রাগপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গত দুই মাস আগে মাঠপাড়ার বাসিন্দা রতন আলীর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যা প্রেম করে একই এলাকার মাইনুলের ছেলে কৃষক বিপ্লবের (২৪) সঙ্গে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়। এতে বরের বাবা ক্ষুব্ধ হয়ে বলে ওই মেয়ের আমার বাড়িতে জায়গা নেই। আর যদি মেয়ের ওজনে টাকা দেয় তাহলে নেব।
তিনি আরও বলেন, এতে মেয়ের বাবাও চালাকি করে মেয়ের ওজনের সমপরিমাণ ৫ টাকার কয়েন ৪০ হাজারের কিছু বেশি টাকা দাঁড়িপাল্লায় মেপে শর্ত পূরণ করেছেন। যেহেতু আমার এলাকায় কোনোভাবেই বাল্যবিয়ে গ্রহণযোগ্য নয় সেজন্য ওরা ভয়ে আমাকে দাওয়াতও করেনি।  
 
ঘটনাটি শুনার পর স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সঙ্গে কথার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু আমার এলাকার কাজী দ্বারা বিয়ে হয়নি, সে কারণে এই অল্প বয়সী মেয়ের বিয়ে আদৌ রেজিস্ট্রার্ড হয়েছে কি না সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। তাছাড়া কনের বাবা রতন আলী এটিকে মানত দাবি করলেও এটি মূলত যৌতুক হিসেবেই বরপক্ষকে দেওয়া হয়েছে।   একই এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে ওজন করে টাকা দেওয়া ঠিক হয়নি। এটি যৌতুক নাকি মানত, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

logo
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: মনিরুজ্জামান মনির