কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি লাখো মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ জুন, ২০২২, 11:19 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ জুন, ২০২২, 11:19 AM
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি লাখো মানুষ
কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৬ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নাঞ্চল ও নদ-নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী চরাঞ্চলের মানুষজন। অনেক পরিবার নৌকা ও বাঁশের মাচানে আশ্রয় নিয়ে দিন পার করছে।
বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পনির সংকট। নিজেদের পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্যের সংকট দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এসব চরাঞ্চলের অনেকেই তাদের গবাদি পশু নিয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
শনিবার (১৮ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সুত্রে জানা গেছে, ধরলার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমা ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ২৩ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চর গ্রামের চান মিয়া জানান, ঘরের ভেতরে বুক পর্যন্ত পানি উঠেছে। পার্শ্ববর্তী উঁচু জায়গা না থাকায় নৌকায় অবস্থান করছি। চুলা জ্বালাতে পারছি না। খুব কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন পার করছি।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মশালের চরের হাসান আলী জানান, কোনো রকমে ঘরের মাচান উঁচু করে বউ-বাচ্চা নিয়ে আছি। যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আর ঘরে থাকারও উপায় থাকবে না।
অন্যদিকে পানির তোড়ে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে দুধকুমার নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ১শ মিটার ভেঙে প্লাবিত হয়ে পড়েছে কয়েকটি গ্রাম।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ১শ মিটার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পুর্বাভাস থাকায় নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্পিড বোট, নৌকা এবং আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলাগুলোতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দসহ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।