কোটা সুবিধা নিতে শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মা বানানো সেই সোনালী আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ অক্টোবর, ২০২২, 11:24 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ অক্টোবর, ২০২২, 11:24 AM
কোটা সুবিধা নিতে শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মা বানানো সেই সোনালী আটক
কোটা সুবিধা নিতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা শ্বশুরকে বাবা ও শাশুড়িকে নিজের মা বানানো গৃহবধূ সোনালী খাতুন আদালতে হলফনামা দিয়ে নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে আটক হয়েছেন। গতকাল সোমবার (১০ অক্টোবর) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হলফনামা করতে গেলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মজনু মিয়া।
কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বেঞ্চ সহকারী লিয়াকত আলী বাদী হয়ে রাতেই ওই গৃহবধূসহ তিনজনকে আসামি করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় এজাহার দিয়েছেন। আসামিরা হলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হকের বড় ছেলে আনিছুর রহমানের স্ত্রী সোনালী খাতুন, নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু ও উলিপুর পৌরসভার নিকাহ রেজিস্টার (কাজী) নুরুল হুদা।
শ্বশুর-শাশুড়ির নাম পরিবর্তন করে নিজ বাবা-মায়ের নাম বসাতে ভুল তথ্য দিয়ে হলফনামা করতে গেলে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে আটকের নির্দেশ দেন। তিনি বর্তমানে কুড়িগ্রাম সদর থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) তাকে জেল হাজতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কয়েক দিন আগে রংপুর আদালতে করা অর্থ সংক্রান্ত একটি মামলার ওয়ারেন্টে সোনালী খাতুনের স্বামী রংপুর বেতারের অফিস সহায়ক আনিছুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ। পরের দিন আদালতে তোলা হলে তিনি জামিন পান।
পুলিশ জানায়, সোমবার দুপুরে সোনালী খাতুন তার শ্বশুর-শাশুড়ির নাম পরিবর্তন করে তার প্রকৃত বাবা-মায়ের নাম দিয়ে কাগজপত্র জমা করে হলফনামা করার চেষ্টা করেন। তার জন্ম তারিখ ১৯৯০ এর পরিবর্ততে ১৯৯৪ সাল দেখিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে করা জন্মসনদ দাখিল করেন। একই জন্মসনদে তার সন্তোষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু তাকে নাগরিকত্ব সনদ দিয়েছেন। তার দাখিল করা কাবিন নামায় বয়সের ঘর ফাকা ছিল। যদিও বিয়ে রেজিস্ট্রির সময় বয়সের ঘর পূরণকরা বাধ্যতামূলক।
হলফনামা করতে দাখিল করা কাগজপত্রে জালিয়াতি করায় আদালত সোনালী খাতুনকে থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। একইসঙ্গে সোনালীসহ চেয়ারম্যান ও কাজীর বিরুদ্ধে মামলা করতে আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে নির্দেশ দেন।
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানান, সোনালী খাতুন থানায় হেফাজতে রয়েছে। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) জেল হাজতে পাঠানো হবে। তিনিসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোনালী খাতুনের বাবার বাড়ি উলিপুরে। নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হকের ছেলে রংপুর বেতারের অফিস সহায়ক আনিসুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটা সুবিধা নিতে শ্বশুর ও শাশুড়িকে বাবা-মা বানিয়ে একটি মাদরাসায় ভর্তি হয়ে দাখিল পাস করেন। পরে ওই সনদ দিয়ে ২০১৪ সালে ভোটার হালনাগাদের সময় ভোটার হন তিনি। সম্প্রতি বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে দেশ জুড়ে আলোচনা শুরু হয়।