দ্বিগুণ বন্দি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, 10:09 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, 10:09 AM
দ্বিগুণ বন্দি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার
ধারণ ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ বন্দি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার। জেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করলেও চাইলেই এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, ১৮২৯ সালে বরিশাল শহরের মূল অংশের ২১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয় জেলা কারাগার। ১৯৯৭ সালের ৩ মার্চ এটিকে কেন্দ্রীয় কারাগারের মর্যাদা দেওয়া হয়। কারাগারের ভেতরে ৫৮ শয্যার একটি হাসপাতাল, ৫টি বন্দি ভবন, ১২টি সেল এবং একটি লাইব্রেরি রয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সেখানে এক হাজার ৯ জন বন্দি রয়েছেন। যার মধ্যে নারী ৩৩ এবং বাকী ৯৭৬ জন পুরুষ। অথচ এই কারাগারটির ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৬৩৩ জন বন্দির।
জানা গেছে, চন্দ্রদীপ ১-৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৭০ জন ধারণ ক্ষমতার কক্ষে থাকতে হয় শতাধিক বন্দিকে। কীর্তনখোলা ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৯০ জনের ধারণক্ষমতা হলেও বন্দি থাকছেন দেড়শতাধিক। ধানসিঁড়ি ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০ জনের ধারণক্ষমতায় ৭০ জনেরও বেশি থাকছেন। এছাড়া রূপসী, আমদানি, কিশোর, ডিভিশন এবং মহিলা ওয়ার্ডগুলোর অবস্থাও একই রকম।
বন্দিদের অভিযোগ, কারা ভেতরে তাদের সংখ্যা বাড়লে অনিয়মের মাত্রা বাড়ে। এছাড়া বন্দিদের বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট সক্রিয়ভাবে কাজ করে। যাদের দ্বারা সাধারণ বন্দিরা হয়রানির শিকার হন। এছাড়া অসুস্থ নয় এমন বন্দিরা টাকা দিয়ে মাসের পর মাস কারা হাসপাতালে থাকেন।
জামিনে বের হওয়া কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি চাহিদা কারা হাসপাতালের। টাকার বিনিময়ে ওখানে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা যায়। এ কারণে যারা একটু বিত্তশালী এবং প্রভাবশালী তারা ওখানেই থাকেন। তাছাড়া সাধারণত ৫৮ শয্যার কারা হাসপাতালে বন্দি থাকেন একশরও বেশি। যার অধিকাংশই ভাড়া দিয়ে আছেন।
আরেকজন জানিয়েছেন, কারাগারে ব্যবহারের জন্য মোট ১২৪টি টয়লেট রয়েছে। তবে রাতে ৪৭টি টয়লেট খোলা থাকে। অথচ টাকা দিলে বন্ধ টয়লেটগুলোও খুলে দেয় সিন্ডিকেটের লোকেরা।
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, কারাগারে স্থান সংকট অনেক পুরানো। এর মধ্যেই সবকিছু ব্যবস্থা করতে হয়। দিনে কতজন নতুন বন্দি আসবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এজন্য বন্দির ওপর ভিত্তি করে কারাগারেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। মৎস্য অভিযান এবং রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হলে বন্দির সংখ্যা বাড়তেই থাকে।