ন্যাটোয় ঢোকার আগ্রহ কমে গেছে : জেলেনস্কি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৯ মার্চ, ২০২২, 2:30 PM
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৯ মার্চ, ২০২২, 2:30 PM
ন্যাটোয় ঢোকার আগ্রহ কমে গেছে : জেলেনস্কি
ইউক্রেন ন্যাটোয় ঢুকতে আর জোর দিচ্ছে না, তাদের পশ্চিমা এ সামরিক জোটে ঢোকার আগ্রহ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনের যে দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলকে রাশিয়া স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়েছে, কিয়েভ প্রশাসন তা নিয়েও আপস করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি। জেলেনস্কির এই মন্তব্যে যুদ্ধ সমাপ্তির নতুন আশা দেখা যাচ্ছে। কারণ, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে মূলত এ দুটি অজুহাতে। খবর এএফপির।
গত সোমবার (৭ মার্চ) রাতে এবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি অনেক আগেই এ সম্পর্কিত প্রশ্নে ঠাণ্ডা হয়ে গেছি। যখন আমরা বুঝতে পেরেছি... ন্যাটো ইউক্রেনকে মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। এই জোট বিতর্কিত বিষয় ও রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষে ভয় পায়। ন্যাটোর সদস্য হওয়া প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, তিনি এমন একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হতে চান না, যেটি হাঁটু গেড়ে ভিক্ষা চায়।
রাশিয়া শুরু থেকেই বলে আসছে, তারা চায় না ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হোক। এটি হলে শত্রুভাবাপন্ন পশ্চিমাদের সমরাস্ত্র রাশিয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে বলে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মস্কো। তা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া সীমান্তবর্তী পূর্ব ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশকে সদস্য করেছে ন্যাটো। ইউক্রেনও বহু বছর ধরে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার চেষ্টা করছে। জোটের পক্ষ থেকে কিয়েভকে বারবার আশ্বস্ত করা হলেও বিষয়টি এখনো ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
রুশ আক্রমণের মুখে ইউক্রেন তাদের আকাশসীমায় নো ফ্লাই জোন ঘোষণার দাবি জানিয়েছিল ন্যাটোর কাছে। কিন্তু ওই প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে পশ্চিমারা। তাদের দাবি, ইউক্রেনে নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করলে রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর সরাসরি সংঘাত লেগে যাবে এবং তাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। ন্যাটোর এ সিদ্ধান্তে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি অভিযোগ করেছেন, নো ফ্লাই জোন ঘোষণা না করে রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে বোমা হামলা চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সংকেত দিয়েছে ন্যাটো।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর আগে দেশটির রুশপন্থি দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি চান, ইউক্রেন সরকারও বিষয়টি মেনে নিক।
রাশিয়ার দাবি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে জেলেনস্কি এবিসি নিউজকে বলেন, তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, এ দুটি অঞ্চলকে রাশিয়া ছাড়া আর কেউ স্বীকৃত দেয়নি, এগুলো ‘ছদ্মবেশী প্রজাতন্ত্র’। তবে আমরা আলোচনা করতে পারি এবং এসব অঞ্চল কীভাবে থাকবে, তা নিয়ে সমঝোতা করতে পারি।
তিনি বলেন, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এসব অঞ্চলে ইউক্রেনের অংশ হতে চাওয়া লোকেরা কীভাবে বসবাস করবে কিংবা ইউক্রেনের লোকেরা কী বলবে, যারা তাদের (লুহানস্ক-দোনেৎস্ক) রাখতে চায়। সুতরাং, প্রশ্নটি তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার চেয়েও কঠিন।
জেলেনস্কি বলেন, এটি আরেকটি আলটিমেটাম, আর আমরা আলটিমেটামের জন্য প্রস্তুত নই। যেটি প্রয়োজন তা হলো, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলা শুরু করা। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় থাকার পরিবর্তে সংলাপ শুরু করা দরকার।