বাংলা-লঙ্কা সম্পর্কের ‘টাইমড আউট’
স্পোর্টস ডেস্ক
০৭ নভেম্বর, ২০২৩, 12:18 PM
স্পোর্টস ডেস্ক
০৭ নভেম্বর, ২০২৩, 12:18 PM
বাংলা-লঙ্কা সম্পর্কের ‘টাইমড আউট’
আধো অবিশ্বাসের বিস্ময়াভিভূতি থেকে তখনও পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেননি তিনি। হাতে ভাঙা হেলমেট নিয়ে একবার ছুটছিলেন আম্পায়ার মরিস এরাসমাসের কাছে, আরেকবার ফিরে আসছিলেন সাকিবের কাছে। আম্পায়ারের শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছিল নিরুপায় তিনি, সাকিব যদি কিছু করতে পারেন। কিন্তু সাকিবও মুখ ঘুরিয়ে বুঝিয়ে দেন, আইনে যা রয়েছে তাই হবে। রাগে-ক্ষোভে এরপর মাঠ থেকে বেরিয়ে যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস।
‘টাইমড আউট’– দুই মিনিটের মধ্যে ক্রিজে এসে বল ফেস করতে না পারায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই প্রথমবারের মতো এমন আউট হলেন কেউ। স্থানীয় সময় ৩:৪৯ থেকে ৩:৫৪ মিনিট– এক বলের মধ্যেই লঙ্কার দুই উইকেটের পতন, যার একটি আবার কোনো বোলারের পাওয়া নয়। পুরো ব্যাপারটিতে হতভম্ভ হয়ে যান দিল্লির প্রেস বক্সে থাকা কলোম্বর সাংবাদিকরা। অবশ্য কম অবাক হননি ঢাকা থেকে আসা সাংবাদিকরাও। কেন এবং কখন সাকিবের মাথায় এই বুদ্ধি এসেছিল? ম্যাচের পর তা জিজ্ঞাসা করবেন বলে অনেকেই নোটপ্যাডে টুকে রাখেন তা।
কমেন্ট্রি বক্স থেকে বেরিয়ে আসা রাসেল আর্নল্ডের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল– ম্যাথুসের টাইমড আউটকে কীভাবে দেখছেন। ‘এটা প্রতিপক্ষ অধিনায়কের ব্যাপার। এখানে আমার কিছু বলার নেই।’ লঙ্কান ভদ্রলোক বুঝিয়ে দিলেন, না বলার মধ্যেই অনেক বলার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
আরেক ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জেকারও তেমনই বললেন। কমেন্ট্রি বক্সের দরজা ঠেলে বেরিয়েই বলতে থাকেন– ‘ক্রিকেটে আরও একটি নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হলাম।’
টেস্টে টাইমড আউটের এই সময়টা থাকে তিন মিনিট। কিন্তু ওয়ানডেতে ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২ মিনিট ধরে নিময়টি সংস্কার করা হয়েছে। নতুন নতুন অনেক নিয়ম এই বিশ্বকাপেও যোগ হয়েছে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফিল্ডিং অধিনায়ক ৫০ ওভার শেষ করতে না পারেন, তাহলে ওই সময়ের পর ত্রিশ গজের বাইরে মাত্র দুই ফিল্ডার নিয়ে খেলতে হবে। সেই সঙ্গে ম্যাচের পর জরিমানাও গুনতে হবে। হয়তো সাকিবের মাথায় এই ব্যাপারগুলোও কাজ করছিল। কিন্তু সাকিবের তো এটাও জানা, ব্যাটারের কারণে দেরি হলে সেই সময়টা ‘পজ’ রাখা হয়।
এদিন ম্যাথুস মাঠে এসেছিলেন ২ মিনিটের মধ্যেই। কিন্তু সে তাঁর হেলমেটের ভাঙা জায়গায় কিছু একটা লাগাতে চেয়েছিলেন, কিংবা তা বদল করতে চেয়েছিলেন। এ কারণেই দেরি হয়ে যায় ম্যাথুসের। অন্তত লঙ্কান সাংবাদিকরা এমনই যুক্তি দিচ্ছেন দিল্লির প্রেস বক্স থেকে।
তবে সময়ক্ষেপণ করার সেটাও তো কৌশল হতে পারে ম্যাথুসের, কে না জানে ক্রিকেট এখন স্নায়ুর পাশাপাশি মস্তিষ্কেরও পরীক্ষা নেই। ক্রিকেট দুনিয়ায় হয়তো তাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হবে, তবে এটা মানতেই হবে টাইমড আউটের সঙ্গে ইতিহাসে মিশে থাকবে সাকিব আল হাসানের নাম।