মিয়ানমারের প্রধান বিচারপতিসহ ৮ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 11:30 AM
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 11:30 AM
মিয়ানমারের প্রধান বিচারপতিসহ ৮ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ, বিরোধীদের দমন ও প্রহসনের বিচারে সহযোগী ভূমিকার কারণে মিয়ানমারের প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ আট ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার পররাষ্ট্র দপ্তর সোমবার (৩১ জানুয়ারি) আলাদা বিবৃতিতে এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মিয়ানমারের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টুন টুন ও, অ্যাটর্নি জেনারেল থিডা ও, দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান টিন ও, প্রধান নির্বাচন কমিশনার থেইন সোয়ে, জান্তার সহযোগী ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি তে যা, তাঁর দুই ছেলে টু টেট তে যা এবং পি ফিয়ো তে যা এবং জান্তার আরেক সহযোগী ব্যবসায়ী জনাথন মিয়ো কিয়াউ থং। প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কের প্রতিরক্ষা ক্রয় পরিদপ্তর এবং জান্তার সহযোগী ব্যবসায়ী জনাথন মিয়ো কিয়াউ থংয়ের প্রতিষ্ঠান কে টি সার্ভিসেস অ্যান্ড লজিসটিকসকে (কেটিএসএল)।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের বিবৃতিগুলোতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সমন্বিত ব্যবস্থা হিসেবে এসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে অবমূল্যায়ন করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা এর আগে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল অং মিন হ্লাইংসহ শীর্ষ অধিনায়কদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন দপ্তর জানায়, মিয়ানমারের অ্যাটর্নি জেনারেল থিডা ও, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান থেইন সোয়ে ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সভাপতি টিন টিন ও এখন মিয়ানমারে বিরোধীদের দমনে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। ওই তিন জন ২০২০ সালে মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য দায়ী। তাঁরা নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপিসংক্রান্ত অন্যায্য দাবিকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মিয়ানমারের অ্যাটর্নি জেনারেল ও দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধানরা দেশজুড়ে গণতন্ত্রপন্থীদের দমন ও স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ নির্বাচিত নেতাদের প্রহসনের বিচার দেখভাল করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন, অভ্যুত্থানকারীদের অভ্যুত্থান ও সহিংসতার আরো জবাবদিহি নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্য ও কানাডাকে নিয়ে আমরা সমন্বিত উদ্যোগ নিচ্ছি।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেন, গত এক বছরজুড়ে মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা দেশের জনগণকে আতঙ্কিত করে আত্মসমর্পণের চেষ্টা করেছেন। সহিংসতা ও ভীত-সন্ত্রস্ত করার মাধ্যমে তাঁরা সমাজে বিভাজন ও সংঘাত সৃষ্টি করেছেন।
লিজ ট্রাস বলেন, যুক্তরাজ্য সব সময় স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পক্ষে থাকবে। সমমনা দেশগুলোকে নিয়ে আমরা এই নিপীড়ক, নৃশংস শাসনকে জবাবদিহি করাব।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ওই তিন ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় ঢুকতে পারবেন না। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মার্কিনরা আর্থিক লেনদেন ও ব্যবসা করতে পারবেন না। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদ থাকলে বাজেয়াপ্ত হবে।