সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতির বিধান বাতিল
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ আগস্ট, ২০২২, 11:47 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ আগস্ট, ২০২২, 11:47 AM
সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতির বিধান বাতিল
ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল ও গ্রেপ্তারের অনুমতির বিধান বাতিল করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ ও গ্রেপ্তার করতে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন নেই। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।
এর আগে গতকাল বুধবার (২৪ আগস্ট) কোনো সরকারি কর্মচারীকে ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার করতে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেয়া সংক্রান্ত সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪১(১) ধারার বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। পরে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করে।
আদালতে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী সরোয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া ও মাহবুবুল ইসলাম।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রিপন বাড়ৈ ও সঞ্জয় মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আদালতের রায়ের পর মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের সব নাগরিক সমান। তারপরেও ৪১(১) ধারায় সরকারি কর্মচারীদের আলাদা সুরক্ষা দেয়া হয়েছে, যা বেআইনি। এটি বাতিল করেছেন আদালত।
২০১৯ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪১(১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না এবং সংবিধানের ২৬(১) (২), ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইনের গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক গেজেটে বলা হয়, ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হবে।
আইনের ৪১(১) ধারায় বলা হয়, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।’
পরে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন ৪১(১) ধারায় বিশেষ সুবিধা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে এ রিট করা হয়। তিনি বলেন, একই ধরনের সুযোগ দিয়ে ২০১৩ সালে দুদক আইনের ৩২(ক) ধারা প্রণয়ন করলে জনস্বার্থে রিট হলে আদালত আইনটিকে বৈষম্যমূলক বলে বাতিল ঘোষণা করেন। একই সুযোগ সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দেয়ার জন্য ২০১৮ সালে প্রণীত ওই আইনের ৪১(১) ধারা আদালতের রায়ের পরিপন্থি।