বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গত- কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে স্থাবর সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আজিমপুর গণপূর্ত উপ-বিভাগ ২ এর উপ- সহকারী প্রকৌশলী তুষার আলম। তুষার আলম আজিমপুর গণপূর্তে উপ সহকারী প্রকৌশলী(সিভিল)থাকাকালীন ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট ঠাকুরগাঁও গণপূর্ত বিভাগে পদায়ন হলে পরবর্তীতে ২৩ জুন ২০২১ সালে ফের আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগে পদায়ন হয়ে বিভিন্ন প্রজেক্টে অনিয়মের রাজ্যে মরিয়া হয়ে ওঠেন।

নিজের ও স্ত্রীর নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন একাধিক বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট। অনিয়ম দুর্নীতি করে বিলাসবহুল জীবনযাপনের পাশাপাশি নিজ এলাকা মানিকগঞ্জে গড়েছেন অঢেল সম্পদ।

এসবের মধ্যে ঢাকার শান্তিনগরে রমনা সার্কুলার রোডে হাউজ- ৫৯, লিফট- ৪ স্ত্রী সোহেলী জেসমিন খানমের নামে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, পান্থপথ স্কয়ার হাসপাতালের ধুমইনো এপার্টমেন্টে স্ত্রীর নামে আরেকটি ফ্ল্যাট, মানিকগঞ্জ সদর বাওটা রোডে রমজান আলী সড়কে ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের মালিক, মানিকগঞ্জ শহীদ তজু রোডে তাজ এন্টারপ্রাইজের মালিক তুষার আলম, এছাড়াও ব্যক্তিগত ২টি প্রাইভেট গাড়িসহ ঢাকার চকবাজারে ১টি দোকানের মালিক। শুধু তাই নয়, বণশ্রীর বি ব্লকে একটি বাড়ি নির্মানাধীন অবস্থায় আছে। সূত্র মতে, তুষার আলমের ব্যাপক অঢেল সাম্রাজ্যের আয়ের উৎস নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আজিমপুর গণপূর্ত অধিদপ্তর উপ-বিভাগ ২ উপ সহকারী প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব প্রাপ্তির পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রচলিত আইন, বিধি-বিধান ও বিভিন্ন সময়ে জারি করা অফিস আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবং সহকর্মীদের মতামতের তোয়াক্কা না করে লাগামহীনভাবে অবৈধ অর্থ উপার্জনে মেতে ওঠেন তিনি। একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

পাহাড় সমান সম্পদের আয়ের উৎস জানতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী তুষার আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি। এমনকি পরপর ৫ দিন অফিসে গিয়ে তুষার আলমকে তার দপ্তরে পাওয়া যায়নি। জানা যায়, কর্মস্থলে অনিয়ম তো বটেই, অনুপস্থিতিতে স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একজন উপ সহকারী প্রকৌশলী এভাবে দিনের পর দিন অফিসে অনুপস্থিতির ফলে বিভাগীয় দপ্তরে চলছে সমালোচনা। সূত্র মতে, উর্ধ্বতন মহলের আশীর্বাদ পুষ্ট গণপূর্তের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তুষার আলম আওয়ামী লীগের শাসন আমলে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছে। উপ- সহকারী প্রকৌশলী থেকে বিভিন্ন প্রজেক্টের অর্থ বাগিয়ে নিয়ে এখন অর্থনৈতিক ভাগ্যে উন্নয়নের সু-বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে তার। শুধু তাই নয়, সরকারী চাকরির সাথে সাথে পতিত সরকারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সাথে তার সক্ষতা থাকার কারণে  আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ তিনি ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত কয়েক বছরে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। তার অঢেল সম্পত্তি নিয়ে অধিদপ্তরের সকলের মনে এখন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

দূর্নীতির ব্যপারে দুদকের এক উপ-পরিচালকের দৃষ্টি আর্কষন করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে বা পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত কোন প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আইনানুনাগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে । এ বিষয়ে আজিমপুর গণপূর্ত উপ-বিভাগ ২ এর উপ- সহকারী প্রকৌশলী তুষার আলমের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার সাংবাদিক মোঃ মিলন আহমেদ নামক এক ব্যক্তিকে দিয়ে সংবাদ প্রচার না করার চেষ্টা চালান।