আমাকে ''রিমোট কন্ট্রোলে হুমকি দেওয়া হলো'' : মোঃ নুরুজ্জামান
নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ মার্চ, ২০২৩, 3:40 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ মার্চ, ২০২৩, 3:40 PM
আমাকে ''রিমোট কন্ট্রোলে হুমকি দেওয়া হলো'' : মোঃ নুরুজ্জামান
আমাকে রিমোট কন্ট্রোলে হুমকি দেওয়া হলো,এখন দায়িত্ব পালনে এক্সকিউজ, রিস্ক ও চ্যালেঞ্জ বলছেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান
তিনি বলেন তার ফেসবুক পেজে লেখেন, সরকারী কর্মচারীগন দায়িত্ব পালনে স্বাধীন নাকি পরাধীন?এই প্রশ্নটা দিনে ১২ ঘন্টা চাকরীর ক্ষেত্রে ২৪ বার আপনার আমার কাছে উত্থাপিত হবেই। দায়িত্ব পালনে আইন আর বিধি হচ্ছে রক্ষাকবচ, নিজের আর ক্যারিয়ারের জন্য সেট সুরক্ষিত বর্ম। দুনিয়ার প্রত্যকেই শেষ অবধি নিজের ভালটাই বুঝে।তাই আইনের ধারায় নিজেকে সমর্পিত করে দিলেই লেঠা চুকে গেল। কিন্তু, লেঠা কি আসলেই চুকে যায়? আমি বলব মোটেই তা নয়।
আপনার আমার কাছে হাজার মানুষের প্রত্যাশা থাকবেই, আইনের প্যাঁচ ধরে ফাইল টা আটকে রেখে প্রতিদিন শত শত মানুষকে লেফট রাইট করালেও অধিকাংশ ভুক্তভোগী সেটা নিয়ে কারো কাছে কৈফিয়ত ও চাইবে না। কারণ, দিন শেষে তার সার্ভিস টা বড্ড প্রয়োজন। আইন বলছে, দায়িত্ব পালনে আপনি বিধি বিধানের অধীন। তাই বলে বিবেকের যন্ত্রণাটা কার অধীন? কাল অফিসে অর্ধশত ব্যাবসায়ী এসে চোখের জল বইয়ে দিয়ে, জানালেন, মাত্র ২ ঘন্টার নোটিশে তাদের ঘর বাড়ী উচ্ছেদ করে দিয়েছে কিছু লোক। তারা কার কাছে চাইবে বিচার? ঘটনাটা ত আমার ই জানা ছিল না। আবার সরকারি অফিসার হয়ে এসব অসহায় মানুষের পক্ষ নিলে সরকারী প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অগত্যা লোকগুলোকে ক্ষতিপুরণের কিছু একটা ব্যাবস্থার জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিদায় দিলে তারা রাজ্যির দোয়া দিয়ে বিদায় নিল। এখানে দায়িত্ব পালনে স্বাধীন হয়েও অন্যের অযাচিত হস্তক্ষেপের কাছে আমি পরাধীন রয়ে গেলাম। এখানে বিবেকটা কেই সচল রাখতে হল।
তিনি আরও বলেন আইনে আছে সর্বোচ্চ ২ বছরের সময় রেলভুমির ভুমির লাইসেন্স দেয়া যাবে না। আচ্ছা, টাকা আদায় ই যদি মুখ্য হয়, তাহলে আপনার পাশের বের হবার রাস্তাটাও যদি আপনার কোন প্রতিপক্ষ ১০০ টাকা বেশী দিয়ে নিলেমে কিনে নেয়, তখন যুগ যুগান্তরের এসব ভুমি ব্যাবহারের লোকজনের সাথে স্থায়ী শত্রুতা তৈরী হচ্ছে এ ক্ষেত্রে গরীবের সুরক্ষা ত আইনে নেই।মাস ছয়েক ধরে কিছু লোকের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে, বর্তমান লীজ গ্রহীতাদের ভুমি বুঝিয়ে দিতে হলে উভয় পক্ষের শত শত মানুষ ভীড় জমাচ্ছে অফিসে। তাহলে আপনি কি আইনের পক্ষ নেবেন, নাকি বিরোধ এড়াতে সমঝোতার লাইনে যাবেন? এক্ষেত্রে যিনি রাজস্ব দিয়ে লাইসেন্স নিয়েছেন, তার অধিকার কে দেখবে এটাই হল নিত্যকার বাস্তবতা।
নুরুজ্জামান বলেন আইনে 'ভদ্রলোককে' কতটা ছাড় দেয়া যায়? আধ ঘন্টা আগে ট্রেনের গার্ড মনিরাজ সাহেব অনুরোধ করছেন মোবাইল কোর্টে এক ধূমপায়ীর বিরদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে। জানা গেল পেশায় তিনি ডাক্তার। তিনি কোচে বসেই সিগারেট খেতে আব্দার করছেন। আচ্ছা, একজন চিকিৎসক ত ভাল করেই
জানেন, স্মোকিং এর কুফল কি? এবার বলুন, তিনি গার্ড সাহেবের অনুরোধ না শুনলে আবার আমি জরিমানা করলে
কি ডাক্তার সাহেবের জন্য সুখকর হবে? উনার চাকুরীর কি ক্ষতি হবে না? অথচ বাদাম বিক্রেতার জন্য কোন ছাড় দিতে চান না চিকিৎসক মহোদয়। এবার বলুন, আইনে ভদ্রলোক হিসাবে কি আলাদা কোন ছাড়ের ব্যাবস্থা আছে?
তিনি মনে করেন আইন অমান্যের কত রকম মেকানিজম! লেখাটা লিখতে লিখতে রাজবাড়ীর আমার সহকর্মী একটা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বাঁধা নিয়ে আমার নির্দেশনা চাইলেন, একজন অবৈধ ঘর উচ্ছেদের সময় দখলকার ফেসবুকে লাইভ
করে অন্যদেরকেও কাজে বাঁধা দেয়ার আহবান জানাচ্ছিলেন।
তিনি মুক্তিযোদ্ধা দাবী করে উচ্ছেদ থামানোর আব্দার করছেন। আমরা সবাই ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথেষ্ট সহানুভুতিশীল। তাহলে উনি কি অবৈধ ঘর তোলার কোন পারমিশন নিয়েছেন? তার কাছে এই পরিচয়টা ই ঢাল। কাল সকালে একজন মেয়র সাহেব এর নির্দেশে অন্যের ঘর ভাঙার অভিযোগ পাই। তিনি জবাবে বলেন, এটা তার 'পৌর এলাকার' ব্যাপার। তাঁকে অনুরোধ করেছিলাম, শালিশ করে সমাধানের জন্য, এই চান্সে
তিনি পক্ষ নিয়ে অন্যের ঘর ভাঙার দায়িত্ব নিলেন! ঠিক একই কায়দায় এক সাংবাদিক তার পরিচয় দিয়ে মার্কেট বানানোর জন্য এসেছেন, তাকে আইনের বিষয় টা বুঝালে সেটা তার কাছে বেশী ভাল লাগল বলে মনে হল না। একজন গেটম্যান সেদিন এসেছেন, এক সেনাসদস্য তাকে লাঞ্চিত করে ট্রেন ঢুকবার আগেই গেট ছেড়ে দিতে বাধ্য করেছেন। আচ্ছা, উর্দি পরা ঐ কর্মচারী কি এটা করতে পারেন?
তিনি বলেন যত আইন, তত প্যাঁচ। আইন ত নাগরিকের অধিকারকে সুরক্ষা দেবার কথা। অথচ গত মাস থেকে মাত্র ৮ শতক সরকারী ভুমির লাইসেন্স নিয়ে ৮ বছরে ৬ টা মামলার গ্যাঁড়াকলের তথ্য পেলাম। সেখানে সিভিল, ক্রিমিন্যাল, কোয়াশী জুডিশিয়ারি, প্রিভেন্টিভ, ১০৭ ধারা, ১৪৪ ধারার মামলাও আছে। অনেকটা মুচেন ঘুল্লির মত প্রকৃত লাইসেন্সী ঘুরছেন প্রায় ১ বছর! এবার বলুন, আমি কি আইনের লেজ নাকি মাথা ধরব? অথচ, ভদ্রলোক সরকারী কোষাগারে ১৭ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেও আজ অবধি জমির দখল পেলেন না। আমি শক্ত করে আইন প্রয়োগ করতে চাইলে আমাকে 'রিমোট কন্ট্রোলে' হুমকি দেয়া হলো, আমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ দেয়া হবে। এবার বলুন, আইন আর বে আইনীর মাঝে কোন সবুজ তরতজা মাঠ আছে কি না?