ঢাকা ০১ জুলাই, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা, ঢাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমলো আমরা একদলীয় দেশের বাসিন্দা, এখন সময় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের: মাস্ক গাজায় ক্যাফে, স্কুল এবং ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৯৫ সন্ধ্যার মধ্যে ছয় অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস ইন্টার মিলানের হৃদয় ভেঙে বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে দুই দিনের অচলাবস্থার পর চট্টগ্রাম বন্দর পুরোদমে সচল শান্তিপূর্ণ আচরণ করলে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, লেনদেন বন্ধ

কমিশন বাণিজ্যে ভারাক্রান্ত রেলওয়ে পুর্বাঞ্চল

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ নভেম্বর, ২০২২,  11:57 AM

news image

ঠিকাদারের মাধ্যমে করা প্রতিটা কাজের বিপরীতে অফিসারদের কমিশন বাণিজ্যে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের উন্নয়ন। প্রতিটি কাজের বিপরীতে ঘুষ হিসেবে চলে যাচ্ছে ২৭ থেকে ৩০ শতাংশ টাকা। ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের পিয়ন থেকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার পর্যন্ত দফায় দফায় কমিশন দিতে দিতে ঠিকাদররাও হয়ে পড়েছেন দিশেহারা, অফিসারদের চাহিদা অনুযায়ী কমিশন না দিলে হয়রানি যেন পিছু ছাড়েনা তাদের। আর এসব কমিশনের চাহিদা মেটাতে কাজ শেষ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী, যার ফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মোটা অংকের টাকায় করা কাজগুলো। কমিশন প্রথা বাতিল করা হলে কমবে রেলের কাজের খরচ, বাড়বে কাজের গুনগত মান এবং টেকসই হবে বহুদিন ও রেলের টাকার অপচয় রোধ হবে।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমনটিই জানিয়েছেন রেলের একাধিক ঠিকাদার। 
জানা যায় রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের ছোট, বড়, নতুন বা পুরাতন যেকোন ধরনের কাজই হোক তার ইস্টিমেট করার জন্য প্রথমে একদফা কমিশন দিতে হয়। তারপর এপিপি অনুমোদন করার জন্য আরেক দফা। তারপরে টেন্ডার করার পুর্বে মৌখিক চুক্তিতে কাজ দেওয়ার নাম করে নেওয়া হয় কমিশন। টেন্ডার ওপেনিং এর পরে মুল্যায়ন কমিটিসহ চুক্তিপত্রে যারা সই করেন প্রত্যেকেই নিয়ে থাকেন নির্ধারিত পার্সেটেন্স। এসবকিছুর পরেও অফিস সহকারী, কথিত চা-পানিসহ হিসাব শাখা আরেক দফা কমিশন দিয়ে পাওয়া যায় বিলের চেক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঠিকাদার জানিয়েছেন অফিসারদের চাহিদামত কমিশনের টাকা দিতে দিতে মূল টাকার ৩০ শতাংশ চলে যায় কমিশনের পিছনে এর সাথে রয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্স এর বাইরে লাভ। এসব খরচের পর ইস্টিমেটের ৪০ শতাংশের বেশি কাজ করা কখনোই সম্ভব হয়না। যার ফলে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ শেষ করে ঠিকাদাররা। কারন কাজের গুনগত মান ও কমিশন একসাথে চলতে পারেনা। হয় কমিশন বন্ধ করতে হবে না হয় নিম্নমানের কাজ বুঝে নিতে হবে। আবার কমিশনের চাহিদা ঠিক রাখতে অনেক সময় প্রযোজনের অতিরিক্ত অর্থ খরচ দেখানো হয় এর ফলে মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে রেলওয়ে। এসব ব্যপারে অডিট টিম মাঝে মাঝে আপত্তি তুললেও তা চিঠি চালাচালি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায়ী ব্যক্তিরা শাস্তির আওতায় আসেনা বলে যেকোন অনিয়ম করতে আর তারা কাউকে পরোয়া করেনা। আবার অডিট টিমের কতিপয় সদস্যও বর্তমানে কমিশনের ভাগ নিয়ে আপত্তি না দিয়ে লিয়াজো করে থাকেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। তবে নিজেদের কাজের যোগ্যতা প্রমান করতে, খুব বেশি অনিয়ম হয়েছে এমন কিছু ফাইলে আপত্তি দিলেও তা অমিমাংসিতই রয়ে যায়।  সম্প্রতি ৫৫ লাখ টাকার একটি কাজে অতিরিক্ত ১৫ লাখ ১১ হাজার টাকা খরচ করার বিষয়ে অডিট আপত্তি ওঠায় একজন এসএসএই ও একজন সহকারী প্রকৌশলীকে জবাব দেওয়ার জন্য নোটিশ দিলেও ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছেন কাজের চুক্তিতে স্বাক্ষর করা ও ইস্টিমেট অনুমোদনকারী কর্মকর্তারা।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রলেওয়ে পুর্বাঞ্চলের বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মো. আব্দুল হানিফ বলেন আমাদের কমিশন কেন দিবে, এখন ইজিপিতে টেন্ডার হয়, চাইলে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে, এখানে না এসে বাসায় বসেও ডকুমেন্ট সাবমিট করতে পারবে।  অন্য কেউ কমিশন নেয় কিনা আমি জানিনা তবে আমি টাকা কামানোর জন্য রেলে আসিনি, এসেছি সেবার জন্য। আমি আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডে ছিলাম, টাকা কামানোর নেশা থাকলে সেখানেই বেশি কামাতে পারতাম, এখানে আসার দরকার ছিলনা। আমি চেষ্টা করছি কমিশন ছাড়াই সবাইকে সেবা দেওয়ার জন্য। 
কমিশনের বিষয়টি অস্বীকার করে রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া বলেন, আমি কারো কাছ থেকে কোন কমিশন বা অফিস খরচ নেইনা। আর কোন ঠিকাদারের ফাইল আমি আটকিয়েও রাখিনা, আমার টেবিল সবসময় পরিষ্কার থাকে। তবে অফিসের অন্য কেউ নিচ্ছে কিনা তা আমি জানিনা।

logo
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: মনিরুজ্জামান মনির