গমের পর চিনিতেও লাগাম টানতে যাচ্ছে ভারত
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ মে, ২০২২, 11:01 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ মে, ২০২২, 11:01 AM
গমের পর চিনিতেও লাগাম টানতে যাচ্ছে ভারত
চিনি রফতানি সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। দেশীয় চাহিদা পূরণের জন্য চিনি রফতানি সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। এর আগে গম রফতানির বিষয়েও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দেশটি।
টাইমস অব ইন্ডিয়া ও রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত ৬ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চিনি রফতানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। দেশটির সরকার সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিনি রফতানি ১০ মিলিয়ন টন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী অক্টোবরে চিনির মৌসুম শুরু হওয়ার আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ রয়েছে তা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি চিনি উৎপাদন হয় ভারতে আর রফতানিতে শীর্ষ দেশ হলো ব্রাজিল। তারপরেই ভারতের স্থান। এ বছর দক্ষিণ আমেরিকায় চিনির উৎপাদন কম হওয়ার কারণে বিশ্বের চিনির চাহিদা বেড়েছে।
ভারতের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতে চিনি উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ হলেও রফতানির কারণে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ রাখা যাচ্ছে না। অনিয়ন্ত্রিত রফতানির কারণে দেশটির অভ্যন্তরে চিনির মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতি তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বাজারে চিনির মূল্য আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি চিনি রফতানি হয় বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, দুবাই ও মালয়েশিয়ায়। এবার ভারত সরকার রফতানির ওপরও শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানা যাচ্ছে। ফলে বিশ্ব বাজারে চিনির দাম বাড়ার শঙ্কা বাড়ছে।
এর আগে গম রফতানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। মোদি সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় বাজারে গমের দাম কমিয়ে আনা। এরপর শুক্রবার (১৩ মে) থেকে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়।
ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গম উৎপাদক হলেও বৈশ্বিক রফতানিতে তাদের অংশ মাত্র ১ শতাংশের মতো। পরিমাণ ও মূল্য উভয় দিক থেকে ভারতীয় গমের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বাংলাদেশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের মোট গম রফতানির ৫৪ শতাংশই এসেছে বাংলাদেশে। ওই বছর ভারতীয় গমের শীর্ষ ১০ ক্রেতা ছিল বাংলাদেশ, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, শ্রীলংকা, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, কাতার, ইন্দোনেশিয়া, ওমান ও মালয়েশিয়া।
বিশ্বের মোট গম রফতানির ২৯ শতাংশই সরবরাহ করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দু’দেশের মধ্যে সংঘাত শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্যের বাজারে রীতিমতো আগুন লেগেছে। হু হু করে দাম বেড়েছে গমের দাম।
যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের রফতানি বন্ধ আর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী ভারতীয় গমের চাহিদা বেড়েছে। ভারতের গম রফতানিকারকরা জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের বিকল্প হিসেবে অনেক ক্রেতাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।