ঢাকা ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
‘মার্চ টু যমুনা’র প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা পাহাড়তলীতে তিনটি মাদকের আস্তানা উচ্ছেদে স্বেচ্ছাসেবক দলের মহড়া এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ রকিবুল হাসান রনি ও তার পরিবারের ভয়ঙ্কর প্রতারণার জাল এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১৬ অক্টোবর একদিন বাকি, নিবন্ধন করেছেন মাত্র ১৫ শতাংশ হজযাত্রী আইনের শাসন কাকে বলে, নির্বাচনের মাধ্যমে দেখাতে চাই : সিইসি গাজা সিটিতে সবাইকে ‘সন্ত্রাসী’ বলল ইসরায়েল, নিহত আরও ৫৩ ইসলামী ব্যাংকের ফেসবুক পেজ হ্যাকড, ওয়েবসাইটে হামলার হুমকি মার্কিন সরকারে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে শাটডাউন

তিন বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতি ৩৯০ কোটি টাকা, টিআইবির প্রতিবেদন

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ মে, ২০২২,  6:02 PM

news image

দুটি কয়লাভিত্তিক ও একটি এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৯০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।বুধবার (১১ মে) গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে টিআইবি। ‘বাংলাদেশে কয়লা ও এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্প: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি ওয়েবিনারের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।

দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি বলছে, এই টাকা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারী, এনজিওকর্মী ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশের পকেটে গেছে।

টিআইবি জানায়, বরিশালের ৩৫০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর গবেষণাটি করা হয়েছে। এটি মূলত গুণগত গবেষণা। গবেষণার সময়কাল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল। গবেষণাটি করতে গিয়ে সরকারি দপ্তর, স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, তিনটি প্রকল্পেই দুর্নীতি হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এই প্রকল্পে ২৫৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ীর এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রে ভূমি কেনাবেচায় দুর্নীতি হয়েছে ১১৯ কোটি টাকা। আর ১৬ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বরিশালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারত, চীন, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে তিন টাকা থেকে সোয়া পাঁচ টাকা পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে তার চেয়ে বেশি দাম ধরা হয়েছে। বরিশাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ধরা হয়েছে ৬ টাকা ৬১ পয়সা, যা অন্য দেশের তুলনায় ১ টাকা ৪৬ পয়সা থেকে ৩ টাকা ১৫ পয়সা বেশি। বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ধরা হয়েছে ৬ টাকা ৭৭ পয়সা, যা অন্য দেশের তুলনায় ৩ টাকা ৩১ পয়সা বেশি।

টিআইবি বলেছে, অন্য দেশগুলোতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে যতটুকু জমি অধিগ্রহণ করা দরকার, বাংলাদেশে তার চেয়ে বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বরিশাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় জমি ছিল ৮১ একর। কিন্তু অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৩১০ একর। বাঁশখালীতে দরকার ছিল ৩০৪ একর। জমি নেওয়া হয়েছে ৬৬০ একর। মাতারবাড়ীতে জমির প্রয়োজন ছিল ৪১৮ একর। কেনা হয়েছে ১ হাজার ৩৫৮ একর। এই জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়েই দুর্নীতি হয়েছে বেশি।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি সরবরাহ চুক্তি না করেই প্রতি টন কয়লার প্রাথমিক দাম ১২০ ডলার হিসাব করে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করায় দুর্নীতির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ইআইএ ছাড়াই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু করা হয়েছে। ইআইএ না করে প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করা হয়েছে। এগুলোকে অনিয়ম বলছে টিআইবি।

প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মাহ্ফুজুল হক ও রিসার্চ ফেলো নেওয়াজুল মাওলা। ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জমান।

logo
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: মনিরুজ্জামান মনির