নিউমার্কেট এলাকায় দোকান খোলার অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ এপ্রিল, ২০২২, 12:29 PM

নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ এপ্রিল, ২০২২, 12:29 PM

নিউমার্কেট এলাকায় দোকান খোলার অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের টানা দুদিনের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় যান চলাচল বন্ধ থাকার পর সড়কে স্বাভাবিকতা ফিরেছে। পরিস্থিতি অনেকাংশেই শিথিল হওয়ায় দোকান খোলার অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার দিনভর নিউমার্কেটসহ আশপাশের এলাকার সব সড়ক অবরুদ্ধ থাকার পর বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হতে দেখা যায়। আগের দিন সন্ধ্যার পর ছোট ও মাঝারি যানবাহন চলাচল শুরু হলেও বুধবার সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছে গণপরিবহনসহ অন্য ভারী যানবাহন।
ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। ওই দিন সকাল ৬টা থেকে নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার সব সড়ক বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, বুধবার সকালে সড়কে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি চোখে না পড়ায় নিউমার্কেটের দোকানপাট ও শপিংমল খোলার অপেক্ষা করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রায় প্রতিটি মার্কেটের নিচে দোকান মালিক ও কর্মচারীদের উপস্থিতি চোখে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের মৌসুমে পুরো একটা দিন দোকানপাট বন্ধ থাকায় তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
সকালে ঢাকা কলেজের সামনে দেখা যায়, কলেজের মূল ফটক বন্ধ। আশপাশে কোনো শিক্ষার্থীর উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকান খোলার উদ্দেশ্যে সকাল ৯টায় মার্কেটে এসেছেন। তারা জানান, ঈদের মৌসুম চলছে। এ সময় মার্কেট না খুলতে পারলে বড় লোকসান হয়ে যাবে। আজ দোকান খোলার জন্য এসেছিলাম, কিন্তু এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত এলেই দোকান খুলব।
হকার্স মার্কেটের কয়েকজন দোকানি জানান, এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কখন দোকান খুলব আর কখন বেচাকেনা করব তা আল্লাহই ভালো জানেন।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ. ম. কাইয়ুম জানান, ব্যবসায়ীরা সব সময়ই দোকান খুলতে চান। তবে তারা কখন দোকানপাট খুলতে পারবেন সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। গতকালের মতো আজ যেন নতুন করে সংঘর্ষ না হয়, সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। মধ্যরাতে দুপক্ষকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এরপর মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অবরোধের পর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড়-সায়েন্সল্যাব এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরও ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেটসহ আশপাশ এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা যায়।
দুদিনের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের ১১ জন সাংবাদিক, ঢাকা কলেজের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এবং ২৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ (১৮) নামের এক কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এদিকে, ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ১০টার দিকে নীলক্ষেত মোড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান ৭ কলেজ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট।