প্রেমে বাধা দেয়ায় শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা : আদালতে জিতু
নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ জুলাই, ২০২২, 10:58 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ জুলাই, ২০২২, 10:58 AM
প্রেমে বাধা দেয়ায় শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা : আদালতে জিতু
প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ানোতেই সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যা করেছে বলে আদালতকে জানিয়েছে অভিযুক্ত স্কুলছাত্র আশরাফুল আহসান জিতু। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রিমান্ড শুনানিতে জিতু নিজেই আদালতকে এ কথা জানায়।
বৃহস্পতিবার আসামি জিতুকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করে। তবে আসামি জিতুর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এ সময় কেন হত্যা করা হয়েছে জানতে চাইলে জিতু বিচারককে বলে, রিমা নামে এক মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল। শিক্ষক আমার প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আমার বাসায় গিয়ে দুর্নাম ছড়িয়েছেন। এছাড়া আরেক মেয়ের কথা বলে আমার বাসায় দুর্নাম ছড়িয়েছেন। আমি এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করি। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
এদিকে, রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জিতুর বয়স ১৯ নির্ধারণ করেছেন। এর আগে মামলার এজাহারে তার বয়স ১৬ বছর দেয়া হয়েছিল।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগী শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার চিত্রশাইল হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ও শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। আসামি জিতু এ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। জিতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মসহ ছাত্রীদের ইভটিজিং করত। ভুক্তভোগী উৎপল কুমার সরকার এ প্রতিষ্ঠানের সচেতন শিক্ষক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নীতি-নৈতিকতার বিষয়টি দেখাশোনা করতেন।
আবেদনে আরো বলা হয়, ২৫ জুন দুপুর দেড়টার দিকে চিত্রশাইল হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলাকালে আসামি জিতুসহ তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে এসে উৎপল কুমার সরকারকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় ও কপালে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়া ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে গুরুত্বর আহত করে। আসামি ক্রিকেট স্ট্যাম্পের সুঁচালো অংশ দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে উৎপলের ডান ও বাম পাশের পেটে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এতে পেটের নাড়ি-ভুঁড়িসহ বিভিন্ন গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় উৎপল মারা যান। প্রাথমিক তদন্তে আসামি জিতুর জুনিয়র দাখিল পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ আসামির অধ্যয়নরত স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র অনুযায়ী ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি তার জন্ম। সেক্ষেত্রে ঘটনার সময় আসামির বয়স ছিল ১৯ বছর ৫ মাস ৮ দিন।
এর আগে জিতুকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় জিতুর বাবা উজ্জ্বল পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
হত্যার এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় ওই ছাত্রের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।