বিএনপি জামাতের মদতে বুড়িমারী স্থলবন্দরে আবারও অস্থিরতা সংঘষের আশংকা
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, 7:40 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, 7:40 PM
বিএনপি জামাতের মদতে বুড়িমারী স্থলবন্দরে আবারও অস্থিরতা সংঘষের আশংকা
গত ১২ তারিখে বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের অসন্তোষ নিরসনে আজ ১৬ সেপ্টেম্বর বিকালে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উভয়পক্ষের সম্মতিতে পূর্ব নির্ধারিত অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সাজ্জাদ গ্রুপ অংশ গ্রহণ করেনি।একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হওয়া যায় যে বিএনপি জামাতের এজেন্ট সাজ্জাদ, আনোয়ার এর নেতৃত্ব সাজ্জাদ গ্রুপ জেলা প্রশাসক এর কার্যালয়ে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় না এসে বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রায় ২ শতাধিক বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে নিয়ে সকাল থেকে স্থলবন্দর এলাকায় অবস্থান করছে। তাদের এই অবস্থানের কারণে যে কোন মূহুর্তে বুড়িমারী স্থলবন্দরে বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টির আশংকা বিরাজ করছে। আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা মামলার চার্জশীট ভুক্ত আসামি সাজ্জাদ হোসপন ও তার গ্রুপের হাতে আবারও কেউ না কেউ হত্যা হতে পারে। প্রকাশ থাকে যে বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রম আইন লংঘনের নজীর বিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শ্রমিক নামধারী সন্ত্রাসী সাজ্জাদ,আনোয়ার গ্রুপ। গঠনতন্ত্র লংঘন করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ বুড়িমারী শাখা কমিটির শ্রম আইন বিরোধী সাংগঠনিক তৎপরতার কারণে বুড়িমারীতে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয় এবং দেখা দেয় চরম অসন্তোষ। সাধারণ শ্রমিকরা কাজ করে নিয়মিত মজুরি পেয়ে আসছেন। কিন্তু বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ শ্রম আইন এবং সংগঠনের গঠনতন্ত্র লংঘন করে বুড়িমারীতে শাখা কমিটি গঠন করে সাধারণ শ্রমিকদের মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করে শ্রমিকদের মাঝে সংঘাত সৃষ্টি করে এবং একটি চত্রু কাজ না করেও মজুরি চেয়ে আসছেন। বুড়িমারী স্থলবন্দরের যে সমস্ত মালামাল বা পণ্য শ্রমিকদ্বারা লোড দেওয়া সম্ভব নয় সেই মালামাল বা পণ্য মেশিন দ্বারা ট্রাকে লোড দেওয়া হয় এবং সেই পণ্য লোড এর মজুরি মেশিন মালিককে প্রদান করা হয়। মেশিন মালিককে মজুরি প্রদানের পর যে অবশিষ্ট টাকা থাকে তাহা সাধারণ শ্রমিকদের ভাগ করে দেওয়া হয় কিন্তু বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ বুড়িমারী শাখা কমিটির নেতারা সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে হিসাবের চাইতেও বেশি টাকা দাবি করে অথচ মেশিনদ্বারা লোডের কাজের মজুরি মেশিন মালিককে দেওয়ার পর অবশিষ্ট টাকা সাধারণ শ্রমিক কখনোই দাবি করতে পারেনা কারণ তারা যে কাজ করে তার মজুরি পেয়ে আসছেন,মেশিন মালিক ব্যতিত অন্য কেউ তথা শ্রমিকরা যে কাজ করেনি সেই কাজের মজুরি চাওয়া সম্পূন্ন বেআইনি।বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন সরদার ও সাধারণ সম্পাদক মো. আজাদ হোসেন কর্তৃক শ্রম আইন ও তার সংগঠনের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে গত ১০ মে ২০২৩ইং তারিখে মো. সাজ্জাদ হোসেন কে সভাপতি ও মো. আনোয়ার হোসেন কে সাধারণ সম্পাদক করে প্রদানকৃত বুড়িমারী শাখা কমিটি শ্রম আইন ও তাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রণয়নের কোন বিধান নেই বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ বুড়িমারী শাখা কমিটিকে কেন্দ্র করে দেশের ২য় বৃহত্তম স্থলবন্দর বুড়িমারীতে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের গঠনতন্ত্র ও শ্রম আইন অনুযায়ী বুড়িমারী শাখা কমিটি দিতে পারে কি না এ বিষয়ে শ্রম অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল আজিম স্বাক্ষরিত একটি পত্রে জানান “বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ (রেজিঃ নং—বি—২১৪৭) এর বিদ্যমান গঠনতন্ত্রে শাখা কমিটি প্রণয়নের বিষয়ে কোন বিধান নেই”।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর স্থলবন্দর লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলাস্থ বুড়িমারী ইউনিয়নে অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দর। বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রম দপ্তর কতৃর্ক তিনটি শ্রমিক ইউনিয়ন (১) বুড়িমারী স্থলবন্দর ও স্টেশন কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং রাজ—১৪৩৮, (২) বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং—রং—০২ ও (৩) বুড়িমারী স্থলবন্দর লোড আনলোড লেবার ইউনিয়ন রেজিঃ নং—রং—০৩ নিবন্ধন প্রাপ্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ৪২নং আইনের ২০২(২) ধারা অনুযায়ী বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকদের যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। শ্রম আইন অনুযায়ী বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ট্রেড ইউনিয়ন'ই স্থানীয় প্রতিনিধিত্বকারী। বুড়িমারী স্থল বন্দরের কোন শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ এর কোন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন বা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন এর অন্তর্ভুক্ত নয়। শ্রম আইনের ২০৩ (২) ধারা অনুযায়ী কোন ফেডারেশন কেবলমাত্র সেই প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করিবে, যে প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে উহার কোন সদস্য ট্রেড ইউনিয়ন যৌথ দরকষাকষি হিসাবে আছে। শ্রম আইন মতে নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া কোন ব্যক্তি কখনোই কোন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সদস্য হতে পারে না। যেহেতু বুড়িমারী স্থলবন্দরের কোন ট্রেড ইউনিয়ন বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত বা সদস্য নয় তাই স্বাভাবিক কারণে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ শ্রম আইন মোতাবেক বুড়িমারী স্থলবন্দরে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পারে না।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ বুড়িমারী শাখা কমিটির কারণে বুড়িমারী স্থলবন্দরে একাধিকবার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সাজ্জাদ,আনোয়ার গ্রুপ শ্রম আইন লংঘন করে বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রভাব বিস্তার করতে দীর্ঘদিন যাবত প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তাই অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বুড়িমারীর সাধারণ শ্রমিকরা।