ঢাকা ২০ এপ্রিল, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
৩টি ড্রোন ধ্বংস করল ইরান, নিরাপদে আছে ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট শুরু ইরানে বড় শহরগুলোতে বিমান চলাচল বন্ধ, সিরিয়া-ইরাকে ব্যাপক বিস্ফোরণ যারা নুন-ভাতের কথাও ভাবতে পারত না, এখন তারা মাছ-মাংসের চিন্তা করে প্রভাব খাটিয়ে আর পরিবেশের ক্ষতির সুযোগ নেই: মন্ত্রী ৭ বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে, অব্যাহত থাকতে পারে তাপপ্রবাহ পরীমণির বিরুদ্ধে নাসিরের মামলা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ১৭ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

রাবি শিক্ষার্থীকে হলকক্ষে আটকে নির্যাতন, শিবির ট্যাগ দিয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগ

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩,  11:47 AM

news image

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এক ছাত্রকে হলকক্ষে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। পাশাপাশি তাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সেই শিক্ষার্থী।

গত রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কৃষ্ণ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্তরা হলেন, হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোলাইমান ও হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার রাতে সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম ইসলামের ৭-৮ জন কর্মী হলের দ্বিতীয় ব্লকের ৩৮৩ নম্বর রুমে এসে কৃষ্ণ রায়কে রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। বের হতে রাজি না হলে এসময় তার বেডপত্র তুলে ফেলে দিয়ে তারা আরেকটি বেড তুলে দেয়। এরপর কৃষ্ণকে সাধারণ সম্পাদক নাইম ইসলামের রুমে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।

কৃষ্ণ জানান, এসময় ভিডিও করতে চাইলে হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তারা মোবাইল ফোন সার্চ করে। এছাড়াও তার সাথে থাকা এক বন্ধুকেও অপমানজনক কথাবার্তা বলে তার ফোনও কেড়ে নেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী কৃষ্ণ রায় বলেন, আমি রাতে পড়াশোনা করছিলাম। হঠাৎ করে তারা আমার রুমে এসে বেডপত্র ফেলে দেয়। আমাকে রুম থেকে বের হতে বললে আমি বের না হয়ে চেয়ারে বসে থাকি। সোলায়মান নামে এক ভাই আমাকে এলোপাতাড়ি চড় থাপ্পড় দেওয়া শুরু করে। আমি ভিডিও করতে চাইলে আমার ফোন কেড়ে নেয়। এরপর আমাকে জোর নাইম ভাইয়ের রুমে নিয়ে যায়। 

কৃষ্ণ আরো বলেন, "আমার বন্ধু মাহবুব আমার পেছন পেছন এসে রুমে ঢুকলে তার ফোনও ওরা কেড়ে নেয়। তাকে রুম থেকে বের করে দিয়ে নাইম ভাইয়ের সামনে আমাকে কান ধরিয়ে উঠবস করায়। আমাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে আমি হিন্দু জানার পর বলে - তোকে এখন মেরে ফেললেও কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না।"

তার সাথে থাকা বন্ধু একই বিভাগ ও বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব বিল্লাহ বলেন, আমি ওকে ধস্তাধস্তি করতে দেখে ছুটে যাই। ওরা আমাকে রুমে ঢুকতে দিতে না চাইলে জোর করে ঢুকলে আমার কাছ থেকে একজন মোবাইল কেড়ে নিয়ে চলে যায়। পরে আমাকে বের করে দিলেও আমার মোবাইল দেয়নি। আধঘন্টা পর আমার মোবাইল ফিরিয়ে দেয়।"

অভিযুক্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম ইসলাম বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমার কর্মীদের সাথে কথাকাটি হয়েছিল। পরে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানতে পেরেছি। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়ে কথাকাটি হয়েছিল। পরে এবিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি এবং ঐছেলে ওই সিটেই রয়েছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, আমি গতকাল রাত ৪টা সময় গিয়েও গার্ডের কাছে খোঁজ নিয়েছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে প্রক্টর দপ্তর থেকে কৃষ্ণ নামে এক শিক্ষার্থীকে হলে ওঠানোর জন্য বলা হয়েছিল। হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রুমে রুমে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করে। আমি এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। এব্যাপারে হল প্রভোস্টের কাছে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

logo
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: মনিরুজ্জামান মনির