ঢাকা ২২ অক্টোবর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
সাগরে নিম্নচাপ, ১ নম্বর সতর্কসংকেত সংস্কারের উপসংহার থাকতে হবে, অনন্তকাল চললে প্রশ্ন উঠবেই: রিজভী ব্যারিস্টার সুমন ৫ দিনের রিমান্ডে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আজ গণজমায়েত আড়াই শতাধিক এসআইকে অব্যাহতি ব্যারিস্টার সুমনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস আজ ফ্যাসিবাদের দোসর তকমায দুঃখজনক: জি এম কাদের জামায়াতের নিবন্ধন : আপিল বিভাগে আবেদন পুনরুজ্জীবিত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ নিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিলেন রাষ্ট্রপতি

লালমনিরহাটে রেল কতৃপক্ষের উদাসীনতা'র কারণে ৭শত কোয়ার্টার বেদখলে!

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ ডিসেম্বর, ২০২২,  3:50 PM

news image

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলে ৪টি বিভাগের মধ্যে লালমনিরহাট অন্যতম। সেই রেলওয়ে বিভাগে প্রায় ৭শ আবাসিক কোয়ার্টার যা এখন রেলের বে-দখলে। কোয়াটার ভবনগুলোর ছাদ ও ওয়ালে ফাটল, জানালা-দরজা নেই, পাকা ছাদ আজ বিধ্বস্ত, ইটের ফাঁকে ফাঁকে আগাছায় ভর্তি, দেখার কেউ নেই। রাতের আধাঁরে কোয়ার্টারগুলোতে চলছে অসামাজিক কাজ।

সন্ধ্যার পর ভবনের পাশের রাস্তাদিয়ে চলতে গেলে গা শিউরে ওঠে। দেখে মনে হয় ভুতুড়ে বাড়ি। এসব ভুতুড়ে বসবাসকারী ভবনগুলো রেলওয়ের আবাসিক কোয়ার্টার। সেই পরিত্যক্ত ও বিধ্বস্ত কোয়ার্টারগুলোয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন কিছু অসহায় পরিবার। শুধুমাত্র রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে রেলওয়ের অধিকাংশ আবাসিক কোয়ার্টারের এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

লালমনিরহাট লাল রংগের উন্নতমানের কোয়ার্টার গুলোতে থাকছে কারা ? রেলওয়ে কতৃপক্ষের কাছে সাধারণ জনগনের প্রশ্ন? 

রেলওয়ে বিভাগীয় শহর লালমনিরহাট। রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বসবাসের জন্য সরকার বাংলাদেশ রেলওয়ের মাধ্যমে আর্নিক ফান্ড/রাজস্ব বাড়ানোর জন্য আবাসিক কোর্য়াটারগুলো তৈরি করে। প্রায় ৯ শত ১০টি কোয়ার্টারের মধ্যে ৭শত কোয়ার্টার রয়েছে রেলের বে-দখলে। পুরনো ও জীর্ণ অধিকাংশ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তা ঘোষনা করা হয়নি পরিত্যাক্ত হিসাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার সীমানা জুড়ে বিভিন্ন রেল স্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশন সংলগ্ন আবাসিক কোয়াটারগুলোয় স্টেশন মাষ্টারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসবাসের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগ কোয়ার্টারগুলো তৈরি করেন। এতে করে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগের আর্থিক আয়/রাজস্ব বেড়ে যাবে। কিন্তু রেল কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও সঠিক তদারকির অভাবে "কোটি কোটি" টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রেল বিভাগ আর সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। বর্তমানে অধিকাংশ কোয়ার্টার রয়েছে বহিরাগতদের দখলে।

বিট্রিশ আমলের তৈরি লাল রংগের ভবনগুলো অধিকাংশ জীর্ন এবং বসবাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে ওই ভবনগুলোতে রেলের কর্মকতা ও কর্মচারীরা না থাকায় যে যার মত দখল করে নিয়েছে। ফলে ভবনগুলো যে কোন মহুর্তে ধসে পরার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বসবাস করছেন বহিরাগতরা। সেই সাথে চুরি হয়ে যাচ্ছে ভবনের ইটসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। বহিরাগতদের দখলে থাকা ওইসব আবাসিক কোয়ার্টারে এখন মাদক ব্যবসাসহ নানান অনৈতিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। 

কয়েকটি কোয়ার্টারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বসবাস কারী এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, মোহুরী, মুদি-দোকানদার, বাস-ট্রাক চালক, হেলপার, হকার, এনজিও কর্মী, শ্রমিক ও দিনমজুররা দিব্বি বছরের পর বছর ধরে আছেন। ওই সব বসবাসকারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা এক শ্রেনীর রেল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে অলিখিত ভাবে মাসিক ভাড়া হিসাবে বসবাস করছেন কোয়ার্টারগুলোয়। যার ভাড়ার টাকা কোন দিনও রেলের আর্ণিক আয়ে বা সরকারের রাজস্ব ক্ষাতে জমা হচ্ছে না। 

আবাসিক কোয়ার্টারগুলো শুধু অবৈধ দখলে নয়, তার সাথে যুক্ত রয়েছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। বেশির ভাগ কোয়ার্টার গুলোয় নেই বিদ্যুৎ এর মিটার। পৌর শহরের আনাচে-কানাচে বেশিরভাগ রেল কোয়ার্টারে মিটার বিহীন বিদ্যুৎ সংযোগ। রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারি মার্সিক মাসোহারা হিসাবে বিদ্যুতের লাইন সংযোগ দিয়ে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অনেকের অভিযোগ। শহরের সাহেবপাড়া, বাবুপাড়াসহ বেশির ভাগ কোয়ার্টারে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, এভাবে চলছে দিনের পর দিন। 

এ ব্যাপারে একাধিক স্হানীয় রেলওয়ের কর্মচারি বলেন, আবাসিক কোয়ার্টারগুলো অবৈধ দখলদারের হাত থেকে রক্ষা করে বিধ্বস্ত কোয়ার্টারগুলো মেরামতসহ নতুন ভবন নির্মান করে রেল কর্মচারিদের বরাদ্দ দিলে  বাংলাদেশ রেলওয়ের আর্নিক ফান্ড বৃদ্ধি পাবে, এবং সরকারের রাজস্ব বেড়ে যাবে, এমনটি প্রত্যাশা করেন সকলে। 

এ বিষয়ে লালমনিরহাট রেল বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডি-ই-এন) আহসান হাবিবের সাথে দেখা করলেও তিনি এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মোহাম্মদ  আব্দুস সালাম এ বিষয়ে বলেন, আমি সদ্য যোগদান করায় কোয়ার্টারের বিষয়ে খোঁজ-খবর তেমন ভাবে জানিনা, তবে জেনে-শুনে অবশ্যই অবৈধ দখলদারের হাত থেকে কোয়ার্টাগুলো উদ্ধারসহ মেরামত করা হবে। 

logo
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: মনিরুজ্জামান মনির