ঢাকা ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
নির্বাচন কবে হতে পারে, জানালেন আসিফ নজরুল সব রেকর্ড ভাঙল সোনার দাম একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সুজেয় শ্যাম আর নেই আ.লীগের আমলে গড়া সিন্ডিকেট এখনও এই সরকার ভাঙতে পারেনি বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি ৭ মার্চ, ১৫ আগস্টসহ জাতীয় আট দিবস বাতিল হচ্ছে লেবাননজুড়ে ইসরায়েলের সিরিজ বিমান হামলা, নিহত অন্তত ২৩ সাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে দূরবর্তী সতর্ক সংকেত কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী পদে ওমর আবদুল্লাহর শপথ আজ সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত ৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে

সান্তাহার রেলগেটটি যেন শহরবাসীর গলার কাঁটা

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৬ জুন, ২০২২,  11:11 AM

news image

রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎ জংশন বগুড়ার ‘সান্তাহার স্টেশন’। স্টেশনটি শহরের প্রাণ কেন্দ্রে হওয়ায় পৌরবাসীকে যেন দু’ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে। প্রতিদিনের সৃষ্ট যানজটের কারনে রেলগেট (লেভেল ক্রসিং) অতিক্রম করে একপাশের মানুষ এখন আরেক পাশে যেতেই ভয় করে। রেলগেটটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকায় চলাচলে অস্বস্তির প্রধান কারন হিসেবে দেখছেন শহরবাসী। এটি নিরসনে এখনো কাউকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায় নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়েই দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন কর্তাব্যক্তিরা। তবে সর্বশেষ এটি সমাধানের জন্য স্থানীয় সাংসদ রেলমন্ত্রীর কাছে দাবী উত্থাপন করেছেন।

রেল বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সান্তাহার জংশন স্টেশন হয়ে ব্রডগেজ ও মিটারগেজ লাইনে আন্তঃনগর, সাধারণ, মেইল ও মালবাহী মিলে প্রতিদিন প্রায় ৪৫টির মতো ট্রেন (আপ-ডাউন) চলাচল করে থাকে। এসব ট্রেন আদমদীঘি, আক্কেলপুর ও রাণীনগর স্টেশন থেকে ছাড়ার সময় সান্তাহার রেলগেটটি বন্ধ করে দেয়া হয়। ট্রেনগুলো রেলগেট অতিক্রম না করা পর্যন্ত গেটব্যারিয়ার ফেলে রাখা হয়। এতে পাশের এসব স্টেশন থেকে সান্তাহারে ট্রেনগুলো পৌঁছতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় লাগে। প্রতিটি ট্রেন গড়ে ১৫ মিনিট করে বন্ধ থাকলে ২৪ ঘন্টায় সাড়ে ১১ ঘন্টার মতো বন্ধ থাকে। ফলে প্রতিদিনই সান্তাহার রেলগেট চত্বরে তীব্র যানজটের কবলে পড়ছেন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, অ্যাম্বুলেন্স, ট্রেনযাত্রী, পণ্যবাহী, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও ছোট-বড় যানবাহনসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। এ নিয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর সান্তাহার স্টেশনের আধুনিকায়ন কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. নুরুল ইসলাম তালুকদার রেলগেটের যানজট নিরসনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের কাছে একটি ফ্লাইওভার ব্রিজের দাবি জানান। এ সময় মন্ত্রী তার দাবীর প্রেক্ষিতে বিষয়টি সংসদ অধীবেশনে উত্থাপন করতে বলেন।

এদিকে সান্তাহার রেলগেট চত্বরে যানজট নিরসনে গত বছরের ২২ নভেম্বর থেকে দু’জন ট্রাফিক ও একজন সার্জেন্ট মোতায়েন করা হলেও বর্তমানে শুধু একজন ট্রাফিক পুলিশকে দেখা যায়। আবার মাঝে মাঝে তাকেও খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কোনো কাজে আসছেনা। ফলে এখন নামেই রয়েছে ট্রাফিক-সার্জেন্টের পদ কিন্তু কাজে নেই। সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম বলেন, যানজট নিরসনে দু’জন ট্রাফিক পুলিশ এবং একজন সার্জেন্ট রয়েছে। এরা বগুড়ার ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের অধীনস্থ। সার্জেন্ট ও ট্রাফিকদের অনিয়মিত দায়িত্ব পালনের বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে (ওসি, সার্কেল এসপি) জানিয়েছি। শিগগিরই হয়তো সমস্যাটি সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী।

সান্তাহার পৌরসভার প্যানেল মেয়র জার্জিস আলম রতন জানান, পৌর শহরের মালগুদামের সামনে দিয়ে একটি সড়ক বের করে পান্নার মোড় এবং পরবর্তীতে পোঁওতা রেলগেট পর্যন্ত নতুন সড়ক করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সড়কের পাশ দিয়ে একটি ড্রেনও নির্মাণ করা হবে এবং রেলগেট থেকে কলেজ রোড় দিয়ে মায়াবিড়ির গোডাউন পর্যন্ত ২ লেন রাস্তা করা হবে।  এতে যানজট কিছুটা হলেও নিরসন হবে বলে আমি মনে করি। রেলগেট চত্বরের ভ্যানচালক নয়ন, জালাল এবং অটোরিকশা চালক স্বপন হোসেন ও জাহিদুল বলেন, রেলগেটটি বন্ধ থাকায় জরুরী মালামাল ও যাত্রী বহন করতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া যেখানে পায়ে হেঁটে চলাচল করায় কঠিন সেখানে গাড়ি চালানোর কথা চিন্তা করা যায় না। রেলগেটটি যেন আমাদের শহরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এই যানজট থেকে মুক্তি চাই।

সান্তাহার রেল জংশনের জন্য সান্তাহার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ শহরে পরিনত হয়েছে। ফলে প্রতিদিন বহু মানুষের আনাগোনা এখানে। এছাড়া আগের তুলনায় এই পথে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে এখন রেলগেট বন্ধ রাখার সময়ও বৃদ্ধি হয়েছে। আর একারনেই প্রতিদিন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে জরুরী ভিত্তিতে একটি ফ্লাইওভার ব্রিজ ও স্পেশাল গেট হওয়া প্রয়োজন।

logo
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: মনিরুজ্জামান মনির