সুস্থ আছে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয়া শিশুটি
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ জুলাই, ২০২২, 11:39 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ জুলাই, ২০২২, 11:39 AM
সুস্থ আছে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয়া শিশুটি
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয়া শিশুটি সুস্থ আছে। তবে অনেকে শিশুটির দায়িত্ব নিতে চাইলেও বেঁচে থাকা তার অপর দুই ভাই-বোনের খোঁজ কেউ নেয়নি। এতে বাবা-মা হারানো তিন শিশুরই ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
বেঁচে যাওয়া ওই নবজাতক মহানগরীর পাড়া লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রোববার (১৭ জুলাই) সকালে লাবিব হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নিহত জাহাঙ্গীর আলম আমার প্রতিবেশী। তার বাবা-মা প্রতিবন্ধী। জাহাঙ্গীর আলমের আগের তিন সন্তানের মধ্যে একজন (সানজিদা) মারা গেছে। অপর দুই ছেলে এবাদত মিয়া (৮) ও মেয়ে জান্নাত আক্তার (১০)। ছেলেটি কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। এখন এই নবজাতকসহ তারা তিন ভাই-বোন হলো। তাদের দাদা-দাদি দুজনই প্রতিবন্ধী হওয়ায় ওই তিন শিশুর দেখাশোনা এমনকি ভরণ-পোষণ জোগানোর কেউ নেই। সবাই নবজাতকের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
তিনি আরো জানান, অনেক মানুষ নবজাতকের দায়িত্ব নিতে চায়। কিন্তু অন্য দুই ভাই-বোনের খবর এখন পর্যন্ত কেউ নেয়নি। আমরা আশাবাদী, শুধু নবজাতক নয়; তিনজনের দায়িত্বই প্রশাসন নেবে।
শনিবার (১৬ জুন) রাত ৯টার দিকে লাবিব হাসপাতালে ওই নবজাতকের খোঁজখবর নিতে যান জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক। তিনি জানান, আমি ওই বাচ্চাটিকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাাম। বাচ্চার চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব ও ভবিষ্যতে যেন তার কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে দেয়া হবে।
ওই দিন দুপুরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের ফকিরবাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) ও মেয়ে সানজিদাকে (৬) নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। পৌর শহরের খান ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম ও স্ত্রী রত্না বেগম মারা যান এবং মেয়ে সানজিদা আক্তার গুরুতর আহত হয়। এ সময় ট্রাকচাপায় রত্না বেগমের পেট ফেটে কন্যাশিশুর জন্ম হয়।
পরে আহত সানজিদা ও নবজাতককে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করে নবজাতককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তবে অতিরিক্ত যানজটের কারণে নবজাতককে চুরখাই কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।