সংবাদ শিরোনাম
ট্রেনে পাথর নিক্ষেপকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৬ এপ্রিল, ২০২২, 11:49 AM

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৬ এপ্রিল, ২০২২, 11:49 AM
ট্রেনে পাথর নিক্ষেপকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি
গেল দুই বছরে দেশের প্রায় ১৮০টি স্পটে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বন্ধ হয়নি পাথর নিক্ষেপ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রেলওয়ে পোষ্যদের নিয়ে গঠিত সংগঠন বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি।
সোমবার (৪ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পাথর নিক্ষেপকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনির।
মনিরুজ্জামান মনির বলেন, গত ১ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার খুলনায় চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। গত দুই বছরে প্রায় ১৮০টি স্পটে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। যেসব ঘটনায় কেউ আহত হয়েছেন সে ঘটনাগুলো মিডিয়াতে এসেছে। এর বাইরেও প্রতিনিয়ত পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা গামী আন্তঃনগর কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে সহকারী ট্রেন চালক কাওছার আহম্মেদ চোখে মারাত্মকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হন। ১৫ আগস্ট খুলনাগামী আন্তঃনগর ট্রেন সীমান্ত এক্সপ্রেসে পাথর নিক্ষেপে আজমীর নামে একটি শিশুর চোখ নষ্ট হয়ে যায়। চলন্ত ট্রেনে পাথরের আঘাতে রেলকর্মীদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
২০১৩ সালে চট্টগ্রামে প্রীতি দাস নামে এক প্রকৌশলী পাথরের আঘাতে নিহত হন। গত বছর স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী উত্তরাঞ্চলে ভ্রমণের সময় তাকে বহনকারী ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। গত ৭ জানুয়ারি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেসে কুমিল্লায় পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ৪ জন যাত্রী আহত হয়। এছাড়া গত ৫ বছরে প্রায় ২ হাজার ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ট্রেনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সংগঠনটির সভাপতি বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সারাদেশের ২০টি জেলার ৭০টি স্থানকে পাথর নিক্ষেপের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করলেও বাস্তবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের সংখ্যা অনেক বেশি। দুষ্কৃতিকারীরা চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে নিরাপদ বাহনকে অনিরাপদ করে তুলছে, করছে রেলওয়ের ব্যাপক ক্ষতি। মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। অথচ রেল কর্তৃপক্ষ কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র কিনা তা চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সনাক্ত করতে পারছে না কারা পাথর ছুঁড়ছে।
তিনি আরো বলেন, রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী ট্রেনে পাথর ছোড়া হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে পাথর নিক্ষেপে কারো মৃত্যু হলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। যদিও এসব আইনে কারো শাস্তির কোন নজির নেই। কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ, মতবিনিময়ের মতো কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকছে। মাঝে মধ্যে পাথর নিক্ষেপকারী হিসেবে অনেককে গ্রেফতার করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই তারা জামিনে বের হয়ে যান। কিন্তু আমরা মনে করি দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত পাথর নিক্ষেপ বন্ধ হবে না।
মনিরুজ্জামান মনির ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের এ ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচার ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান।
সম্পর্কিত